শফিক হাসানের বই ‘লেখা অলেখা চিঠি’


‘এই চিঠি যখন তোমার হাতে পড়বে তখন আমি...।’
প্রেক্ষাপট জনে জনে ভিন্ন। কিন্তু চিঠির সূচনা-ভাষা এক। নানা কারণেই মানুষ জীবন থেকে পালায়, চেনা পরিমণ্ডল থেকে সরিয়ে নিতে চায় নিজেকে, নিষ্কৃতি চায় বর্তমান ক্লেদ থেকে। পলায়ন, পশ্চাদপসরণের আগে তার প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায় এক বা একাধিক চিঠি লেখা। মা যদি প্রেমিকের হাত ধরে চলে যেতে চান দূর দিগন্তে তখনো পুত্রকন্যাকে প্রস্থানের খবর চিঠি লিখে জানিয়ে যেতে চান। আবার সন্তান যদি বাবা-মাকে ছেড়ে কোনো আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কিংবা নিছক ‘ব্যক্তিগত’ কাজে সংসার ত্যাগ করতে চায় তারও চিঠি লেখা জরুরি হয়ে দাঁড়ায়। ‘আমাকে খোঁজার চেষ্টা কোরো না, পাবে না’ এমন সতর্কবার্তা অনেকেই দেয় বটে, কিন্তু কতদূর যেতে পারে মানুষ! কতটুকু বিস্তৃত জীবন-জগতের পরিধি! 

বলা হচ্ছে চিঠির কথা। কিন্তু কোথায় চিঠি, চিঠির দেখা এখন পাওয়া যায় কি? প্রযুক্তি দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে চিঠি লেখার কলম, মনের ভাষা, হৃদয়ের কথা! মোবাইল ফোন, এসএমএস কিংবা ইমেইল চিঠির স্থান কেড়ে নিলেও বিকল্প হয়ে উঠতে পেরেছে কি? মোটেও নয়। আদতে চিঠির কোনো বিকল্প হয় না। একজন মানুষ যত সহজে, যত ভালোভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারে চিঠিতে অন্য কোনোভাবে সেটা পারে না। সম্ভবও নয়। মনোভাবনার সর্বোত্তম প্রকাশ, শৈল্পিক রুচির বিস্তার ঘটানো যায় চিঠিতে, লিখনশৈলীতে ধরা পড়ে ব্যক্তির চরিত্র, মানসিকতা কিংবা জীবন-অন্বেষা। চিঠি আদানপ্রদানের অন্যতম মাধ্যম ডাকঘর পোস্ট অফিস। পোস্ট অফিসগুলো এখন ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হতে শুরু করেছে। অনেক জায়গাতেই জবুথবু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ডাকঘর। শেষ পরিচয়টুকু এখনো বিলীন হয়নি এখনো! নগর ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় এখনো এতিমের মতো কিছু পোস্টবক্স দেখা যায়। এগুলো দাঁড়িয়ে থাকে প্রাগৈতিহাসিককালের কোনো স্থাপত্যের মতো। নীরব হাহাকারও কি বেজে ওঠে না সংবেদনশীল মানুষের মনে! কিছু চিঠি এখনো বহন করছে সরকারি পোস্ট অফিস ও সর্বাধিক জনপ্রিয় এবং তুলনামূলক বিশ্বস্ত বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিস।

লেখা অলেখা চিঠি
শফিক হাসান
বিষয় : প্রবন্ধ
প্রচ্ছদ : শতাব্দী জাহিদ
প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি ২০২২
পৃষ্ঠা : ৯৬
মূল্য : ২৪০ টাকা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ