SHOT ONE
গাঢ় সবুজ শুধু চারপাশে, সবুজ গাঢ়;
SHOT TWO
অসংখ্য কালোবিন্দু সবুজের ওপর, অসংখ্য
SHOT THREE
লক্ষ লক্ষ মানুষের কান্না চিৎকার হাসি উপহাস সবুজের ওপর প্রতিটি কালো বিন্দু মানুষের মুখ হয়ে যায় বিভিন্ন জাতির, প্রতিটি মুখ ক্রমে সারিবদ্ধ হয় শোনা যেতে থাকে একটানা কান্না চিৎকার হাসি উপহাস
SHOT FOUR
বিভিন্ন জাতির বিভিন্ন জাতীয় পোষাক, মানুষেরা মিছিল করে এগোতে থাকে বৈষ্ণবের পাশে মুসলমান ইহুদির পাশে আফ্রিকান উপদেবতার উপাসক খ্রিস্টানের পাশে বৌদ্ধ
SHOT FIVE
মিছিলের ওপর, নানা দেশের নানা রঙের নানা বয়সের মানুষের ওপর একরঙা শকুনেরা উড়তে থাকে, অসংখ্য শকুন মিছিলের ওপরে ওপরে শকুনেরা আকাশের ঘন নীলকে ডানা নাড়িয়ে নাচায় একটানা কান্না হাসি চিৎকার উপহাস বেড়ে ওঠে আরও হঠাৎ সব স্তব্ধ সকলে থেমে যায় যে যে অবস্থায় ছিল
SHOT SIX
শকুনেরা শূন্যে ভাসে, অনড়; মানুষেরা সারিবদ্ধ, ১পা তুলে কেউ কেউ মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে, অনড়
SHOT SEVEN
অন্ধকারান্ধকারাদ্ধকারাদ্ধকারাদ্ধকারাদ্ধকারদ্ধকার
SHOT EIGHT
সবুজ বিস্তীর্ণ উপত্যকা আর ঢালু নিরেট কালো উঁচু আকাশের পেট চিরে পাহাড় যার স্তব্ধ ঢেউ দিগন্ত পেরিয়ে আরও দূরে চলে গ্যাছে
SHOT NINE
এক দঙ্গল উলঙ্গ শিশু, কাঁদে হাসে হাত-পা ছোঁড়ে তারা সেই ঢালু বিস্তীর্ণ উপত্যকায় ঘাসের ওপরে শিশির হয়ে শুয়ে থাকে হাত-পা ছোঁড়ে হাসে কাঁদে
SHOT TEN
পাহাড়ের শীর্ষ ছুঁয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে নেমে আসে এক ঝরনা, ঝরনার জল রক্ত লাল
SHOT ELEVEN
ঝরনার প্রবল বন্যায়, সেই গাঢ় রক্ত লাল জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায় শিশুরা, শিশুরা রক্ত নদীতে ভাসে কাঁদে হাসে
SHOT TWELVE
পাল পাল শকুন সহসা নেমে আসে তীব্রগতি ভাসমান শিশুদের দিকে শকুনেরা শূন্যের অনড় অবস্থা ছেড়ে নেমে আসে—নেমে এসে প্রতিটি শিশুর চোখের ভেতর তাদের ঠোঁট ঢুকিয়ে দ্যায়—নখ দিয়ে ছিঁড়ে ফেলে শিশুদের নাভি লিঙ্গ, মেয়ে শিশুদের যোনি— শিশুদের চোখ দিয়ে রক্ত পড়ে, নাভি লিঙ্গ যোনি দিয়ে রক্ত ঝরে, রক্ত এসে মেশে রক্ত নদীতে
SHOT THIRTEEN
অজস্র পাখিপাখালির ঘুম ভাঙা গান আর সীমাহীন সাদা পাখিদের ডাক আর সাদা সব স্তব্ধ
SHOT FOURTEEN
শ্বেতপাথরের দীর্ঘ এক খ্রিস্টমূর্তি খ্রিস্টমূর্তির প্রতি প্রত্যঙ্গ কালো সাপ তাদের হিসহিসানি
SHOT FIFTEEN
খ্রিস্টমূর্তির বাঁপাশ দিয়ে এগিয়ে আসে মানুষের বর্ণময় মিছিল, বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জাতির মানুষেরা তাদের জাতীয় পোষাক পরে এগিয়ে আসে পুরুষমানুষের বিশাল সম্প্রদায়, প্রত্যেকের বাঁচোখের জায়গায় একটি করে অণ্ডময় লিঙ্গ আর খ্রিস্টমূর্তির ডানদিক দিয়ে এগিয়ে আসে রক্তনদী, নদীতে ভাসমান শিশুদের ছিন্নভিন্ন শরীর, কারো মুণ্ডু শুধু কারো হৃদপিণ্ড পাকস্থলী যোনি বা পা-হীন তলপেট কারো এই সব ছিন্নভিন্ন শিশু প্রত্যঙ্গোর ওপর বসে থাকে ক্লান্ত শকুনেরা
SHOT SIXTEEN
মানুষের মিছিল খ্রিস্টমূর্তি প্রদক্ষিণ করে রক্তনদীর জল পড়ে, ডুবে যায় সবুজ উপত্যকার ঢালু দেশ রক্তে ডুবে যায় খ্রিস্টের পেরেক বিদ্ধ পা ক্রমে উরুছোয়া রক্ত জলে দাঁড়িয়ে থাকে বিভিন্ন জাতির বর্ণময় মিছিল মিছিলের মানুষদের ডানচোখ দিয়ে জলে পড়ে, বাঁ চোখের বরাদ্দ
জায়গায় লিঙ্গ থাকায় ঝরে পড়ে বীর্যরস – শাদা বীর্য রক্তে মিশে যায় ভেসে থাকে- ছিন্নভিন্ন শিশু প্রত্যঙ্গ, প্রত্যঙ্গের ওপর শকুনেরা
SHOT SEVENTEEN
খ্রিস্টমূর্তির গায়ে জড়ানো কালো সাপগুলো নেমে আসে রক্তস্রোতে সাপেরা সাবলীল সাঁতারের সাহায্যে প্রত্যেকটা মানুষের কাছে চলে আসে এবং মানুষেরা বাধা দেবার আগেই তাদের গা বেয়ে উঠে যায় মুখের ভেতর দুর হতে ভেসে আসে লক্ষ কণ্ঠের ঘোষণা অয়ম আত্মা অয়ম আত্মা অয়ম আত্মা অয়ম আত্মা অয়ম আত্মা...
SHOT EIGHTEEN
মিছিলের প্রতিটি মানুষের মুখ থেকে বেরিয়ে থাকে একটা করে সাপের ফণা শকুনেরা যারা ভাসমান শিশু প্রত্যঙ্গের ওপর রেখেছিল তাদের শরীরের ভার, সেইসব শকুনের মাথায় দ্যাখা যায় একটি করে সাপ
SHOT NINETEEN
খ্রিস্টমূর্তি নড়ে ওঠে, দুলে ওঠে সমগ্র ব্যক্তি কাঁপতে থাকে দৃশ্যমান প্রতিটি বর্গফুটের অনুঅংশ প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ফুলে কেঁপে ওঠে রক্তনদী পাগলা ঘণ্টা বাজতে থাকে দ্রুত আরও দ্রুত খ্রিস্টমূর্তির পাথর হাত নড়ে ওঠে শকুনেরা চিৎকার করে আকাশে ওড়ে ডানা ঝাপটায় শিশুদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জোড়া লাগতে থাকে এলোমেলো মুণ্ডুর তলায় ধড়ের বদলে উরু কোনোটার–কারোর হাতের জায়গায় পা কারোর নাভিমূলেই যোনি
SHOT TWENTY
প্রবল জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঁচার জন্যে মানুষেরা গোল হয়ে ঘুরে ঘুরে খ্রিস্টমূর্তির চারপাশে সাঁতার শুরু করে তাদের মুখে হাসির বদলে দুমুখো সাপ বাঁ চোখের বরাদ্দ জায়গায় লিঙ্গ জোড় লাগা কিম্ভুত শিশুমূর্তিগুলি জমতে থাকে খ্রিস্টমূর্তির লিঙ্গ দেশে তাদের ওপরে শকুনেরা শকুনদের মাথায় ফণাতোলা সাপেরা।
[শৈলেশ্বর ঘোষ সম্পাদিত ক্ষুধার্ত সংকলন থেকে পুনঃপ্রকাশ করা হলো৷]
0 মন্তব্যসমূহ
প্রাসঙ্গিক ও মার্জিত মন্তব্য করুন