গতরাতে দ্রুত ঘুমোতে যাবার ফলস্বরূপ আজ সকাল সকাল ঘুম ভাঙলো৷ যদিও বিছানা ছাড়তে নারাজ৷ এর মধ্যেই জাদুর বাক্সে টুং— নোটিফিকেশন এলো! কী আশ্চর্য, সকালের উপহারস্বরূপ লিটলম্যাগের সফ্টকপি এসে হাজির! ‘একালের কবিকণ্ঠ’— সুবীর সরকার সংখ্যা! এখনো ছাপা হয়নি৷ দ্য লাস্ট প্রুফ— কু ঝিক ঝিক চলমান৷ আমার সকালপাঠের রুটিনে আজ এসে পড়লো এই কপিটি! আর পড়তে শুরু করলাম,
৫৪ ছুঁতে চলা জীবনে অগণন মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে। তাদের অনেকেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নেই। সমাজের উচ্চ পর্যায়ে ঘোরাঘুরি নেই। কিন্তু এই পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের তারাই কিন্তু সেরা ছাত্র। এই সব মানুষেরা আবার আমার শিক্ষক। আমার অনুসন্ধানী হয়ে ওঠা, লোকসমাজে মিশে যাওয়া, স্থানিক ইতিহাসে আগ্রহী হয়ে ওঠা এবং আমার জীবনবোধ নির্মাণ বিনির্মাণে এই মানুষদের কাছেই আমার আজন্মের ঋণ। প্রতিটি মানুষ আসলে গল্পের খনি। প্রতিটি মানুষ হয়ে উঠতে পারেন আখ্যানের বিষয়।
(আমার কবিতাজীবন, আমার ভুবনজোত/ সুবীর সরকার)
এটুকু পড়ে ভাবছি, সুবীরদার জীবন যেমনটা দেখি আমি, লেখায়-যাপনে সমান, মানুষটা মায়াবী এ জগৎ ভ্রমণ করে চলেছেন দুচোখে প্রিয়তমের পয়গাম নিয়ে!
পাঠক, অনুভব করুন৷ যতোটা সরলবাক্য পড়ে চলে গেলাম, এ বাক্যের ছায়া ততোধিক গভীর, স্থায়ী৷
কবিকে লেখা চিঠিগুলো (১৯৯৫—২০০৩) পড়ছিলাম৷ অগ্রজ সাহিত্যিকগণের লেখা চিঠিগুলোতে কী স্নেহ, কী প্রেম! কত ভালোবাসা নিয়ে গৌরাঙ্গ মিত্র তৎকালীন নবীন লেখক সুবীর সরকারকে বলছেন— “সুবীর প্রকৃতপক্ষে একটা পাগল। ভাবপাগল। কবিতাপাগল। সেইজন্য সুবীরকে ভুলে যাওয়া বড় জোর সাময়িক হতে পারে। চিরতরে নয়।”
একগুচ্ছ চিঠির পরে পাঠ করলাম জীবনপঞ্জি আর গ্রন্থপঞ্জিও৷ মনে হলো, জীবনপঞ্জি ও গ্রন্থপঞ্জিকে আরেকটু পূর্ণতা দিলে বোধহয় ভালো হতো৷
এতকিছু পড়তে চাইনি শুরুতে৷ কিন্তু লোভ সংবরন করতে পারলাম কই! সম্পাদকীয়, গুচ্ছকবিতা ও প্রবন্ধগুলো অপঠিত রইলো, যা সুবীর সরকারের সাহিত্যকীর্তিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেছে বলেই আমার ধারণা৷ ‘একালের কবিকণ্ঠ’ প্রকাশ হোক, তারপর পত্রিকা হাতে নিয়ে সকৌতুহলে রয়ে সয়ে পড়বো; লোভাতুর প্রেমিকের মতো নয়৷
নদীতে ভেসে আসা কাঠের বন্দুক।একজন পুরোনো মানুষের সাথে ঘুরে ফিরে দেখা হয় জল ও জঙ্গলে শুনি পাখির শিস।দূরে চলে যাচ্ছে ক্রমে খড়মের শব্দ।(বন্দুক)
0 মন্তব্যসমূহ
প্রাসঙ্গিক ও মার্জিত মন্তব্য করুন